Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

নিরাপদ আম বাগানের যত্ন ও আম ভক্ষণে সচেতনতা

নিরাপদ আম বাগানের যত্ন ও আম ভক্ষণে সচেতনতা

কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল্লাহ-হিল-কাফি

বাংলাদেশ বিগত ১০-১২ বছরে ফল আবাদে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আম উৎপাদনে আমাদের এই ছোট আয়তনের দেশটি সপ্তম আর মোট ফল উৎপাদনে ২৮তম। আমগাছ হতে আম সংগ্রহের পর হতে শুরু করে পরবর্তী ফুল আসা পর্যন্ত বিভিন্ন পরিচর্যা প্রয়োজন হয়। আম সবার কাছে পছন্দনীয় এবং জনপ্রিয় একটি ফল।
কিন্তু আমাদের দেশে আম গাছের ফলন তুলনামূলকভাবে কম অর্থাৎ প্রতি একক জমির গড় ফলনও কম। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে ফলনের ব্যাপক তারতম্য দেখা যায়। যেমন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীতে আমের ফলন অন্য যে কোনো এলাকার চেয়ে অনেক বেশি। উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে একটু যতœবান হলেই আমের ফলন কয়েকগুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
অন্যান্য ফসলের মতো আমগাছের সুষম বৃদ্ধি এবং অধিক ফলনের জন্য প্রতি বছর সার ব্যবহার একান্ত দরকার। গাছের বয়স, আকৃতি এবং মাটির উর্বরতার ভিত্তিতে আমগাছের সারের মাত্রা নিরূপণ করতে হয়। চারাগাছ ও ফলবান গাছে বিভিন্ন মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হয়। মাটিতে জৈবসার দেয়া ভালো কারণ এতে মাটির গুণগত মান বৃদ্ধি পায় এবং গাছের ফলধারণ ক্ষমতা বাড়ে। বিভিন্ন বয়সের গাছে কি মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে তা সারণি-দ্রষ্টব্য।
সমস্ত সার ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করা ভালো। তবে সম্পূর্ণ সার একবারেও দেয়া যেতে পারে। প্রথম কিস্তিতে অর্ধেক সার বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে বাকি সার আশ্বিন মাসে প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে রসের অভাব থাকলে সার দেয়ার সাথে সাথে পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। গাছের খাদ্য আহরণকারী শিকড়গুলো গাছের কাÐ বা গোড়া থেকে দূরে থাকে তাই গাছের একেবারে গোড়ায় সার প্রয়োগ করা উচিত নয়। সার দুইভাবে দেয়া যেতে পারে। প্রথমত রিং পদ্ধতিতে ও দ্বিতীয়ত মাটির উপরে ছিটিয়ে। রিং পদ্ধতিতে প্রয়োগের ক্ষেত্রে গাছের  গোড়া থেকে প্রায় ২ মিটার দূরে যেখানে খাদ্য আহরণকারী শিকড় রয়েছে সেখানে  ৩০ সেমি. প্রশস্থ ও ১৫-২০ সেমি. গভীর একটি চক্রাকার নালা কেটে সেই নালার ভেতর জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে নালাটি মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। অপরপক্ষে মাটিতে ছিটিয়ে সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে দুপুরে মাটির যতটুকু স্থানে গাছের ছায়া পড়ে ঠিক ততটুক স্থানে সব ধরনের সার ছিটিয়ে কোদাল দ্বারা মাটি কুপিয়ে বা চাষ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।
আমের চারা রোপণের পর পরই চারার গোড়ায় নিয়মিত পানি সেচ দেয়া প্রয়োজন। চারা গাছে বর্ষাকাল ছাড়া সব ঋতুতেই পানি সেচ দেয়া যায়। এ ছাড়া ফলবান গাছেও খরা মৌসমে অন্তত দুইবার সেচ দেয়া প্রয়োজন। আমের পূর্ণ মুকুল অবস্থায় একবার ও আম গুটি অবস্থায় আরেকবার পানি সেচ দেয়া প্রয়োজন। এসময় সেচ দিলে আমের গুটি ধারণ বৃদ্ধি পায় ও গুটি ঝরা রোধ হয়। এ ছাড়াও আমের বৃদ্ধি অবস্থায় মাটিতে রসের অভাব দেখা দিলে পানির সেচ দেয়া প্রয়োজন। সুযোগ বুঝে চাষের মাধ্যমে আগাছা দমনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আম সংগ্রহ শেষ হলে আমগাছ হতে রোগাক্রান্ত বা মরা ডালপালা  একটু ভালো অংশসহ কেঁটে ফেলতে হবে। আমগাছে পরগাছা থাকলে সেগুলো কেটে অপসারণ করতে হবে।
দমন পদ্ধতি
আম বাগান হতে ভালো ফলন পাওয়ার জন্য এই সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাঝেমাঝে আম বাগান পরিদর্শন করতে হবে। সঠিক সময়ে রোগ ও পোকামাকড় দমন করতে ব্যর্থ হলে আমের ফলন মারাত্মকভাবে হ্রাস পেতে পারে। এসব রোগ ও পোকামাকড় দমনের জন্য সঠিক বালাইনাশক নির্বাচন করে নির্দিষ্ট মাত্রায় বা ডোজে সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্যবহার করলে আমের আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে। যেমনÑ ১. হপার পোকা অন্ধকার বা বেশি ছায়াযুক্ত স্থান পছন্দ করে তাই নিয়মিতভাবে গাছের ডালপালা ছাঁটাই করতে হবে যাতে গাছের মধ্যে আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে। ২. আমের মুকুল যখন ১০-২৫ সেন্টিমিটার হয় অর্থাৎ ফুল ফোটার আগে তখন একবার এবং আম যখন মটর দানাকৃতি হয় তখন আর একবার সাইপারমেথ্রিন, কার্বারিল অথবা ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রæপের কীটনাশক নির্দেশিত মাত্রায় মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছ স্প্রে করতে হবে। ৩. আমের হপার পোকার কারণে যেহেতু শুঁটিমোল্ড বা ঝুল রোগের আক্রমণ ঘটে সুতরাং এই রোগ দমনের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক হপার পোকা দমনের জন্য ব্যবহার্য কীটনাশকের সাথে নির্দেশিত মাত্রায় মিশিয়ে ¯েপ্র করতে হবে। এই হপার বা ফুদকি পোকাটি আমের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে। সুতরাং এই পোকাটিকে আমবাগান হতে তাড়ানোর জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থাপনা সময়মতো গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় আমের ফলন একবারে কমে যেতে পারে।
পাউডারি মিলডিউ রোগের আক্রমণ প্রধানত আমের মুকুল ও কচি আমে দেখা যায়। প্রথমে আমের মুকুলের শীর্ষ প্রান্তে সাদা বা ধূসর বর্ণের পাউডারের আবরণ দেখা যায়। অনুক‚ল আবহাওয়ায় এই পাউডার সম্পূর্র্ণ মুকুলে দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত মুকুলের সমস্ত ফুল নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থায় শুধুমাত্র মুকুলের দÐটি দাঁড়ায়ে থাকে। আক্রমণ বেশি হলে সমস্ত মুকুল নষ্ট হওয়ায় গাছে কোনো ফলধারণ হয় না। রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই সালফার গ্রæপের ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিনের ব্যবধানে দুই বার ভালোভাবে ¯েপ্র্র করতে হবে।
দাঁদ রোগ আম মটরদানার মতো হলেই শুরু হতে পারে। আক্রান্ত আমের শরীর বাদামি রং ধারণ করে, খোসা ফেটে যায় ও খসখসে হয়ে উঠে। আক্রান্ত আমের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে তা ঝরে পড়ে। রোগের আক্রমণে বাড়ন্ত আমের শরীরে বাদামি দাগের সৃষ্টি হয়। অনুক‚ল    আবহাওয়ায় দাগগুলো বাড়তে থাকে এবং সম্পূর্ণ আমের শরীর ঢেকে ফেলে। আক্রান্ত স্থানের চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। আমের শরীর খসখসে অমসৃণ হওয়ার কারণে আমের বাজার দর কমে যায়। রোগের আক্রমণ দেখা দেয়ার সাথে সাথে রোভরাল (প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম) অথবা ব্যাভিস্টিন প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে অথবা ক্যাবরিওটপ প্রতি লিটার পানিতে ৩ গ্রাম হারে           ৭-১০ দিন পর পর ৩-৪ বার ¯েপ্র্র করে গাছ রোগমুক্ত রাখা যায়।
আমে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার
অসাধু ব্যবসায়ীরা কিছু কিছু সময় আমে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে।
কার্বাইড দিয়ে পাকানো ফল চেনার উপায় : মৌসুমের আগে বাজারে আসা কোন ফল কিনে খাওয়া উচিত নয়।  যেসব ফলের গায়ের রঙ সর্বত্রই একই রকমের, দেখতে অনেকটা টকটকে কাঁচা হলুদ রঙের মতো। বুঝতে হবে তা  কৃত্রিম উপায়ে ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে পাকানো ফল। কৃত্রিম উপায়ে কলা পাকানো হলে কলার রঙ হলুদ এবং কলার বোঁটা, কাঁধি গাঢ় সবুজ থেকে যাবে। টমেটোর রঙ ও চামড়া সমানভাবে টকটকে গাঢ় লাল হয়ে যাবে। আম ও পেঁপের রঙ কমলার মতো রঙ হয়ে যাবে। সুতরাং ফল কিনতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
কালটার (প্যাকলোবিউট্রাজল) : কিছু কিছু আম ব্যবসায়ী বেশি ফলনের আশায় আমগাছে কালটার বা প্যাকলোবিউট্রাজল ব্যবহার করেন। বাংলাদেশে এ রাসায়নিক দ্রব্যটি এখনও ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়নি। এটি পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে আম বাগানে ব্যবহার করা হয় তবে তা দশ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের বাগানে। ধারাবাহিকভাবে এ রাসায়নিক দ্রব্যটি আমগাছে ব্যবহারের ফলে সমস্যা দেখা যায় যেমন : গাছের নতুন ডগা/শাখা-প্রশাখা খাটো হয়ে যায় এবং পাতার আকার ছোট হয়ে যায়। গাছের আকার আকৃতি রোগাক্রান্ত অথবা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি রয়েছে বলে মনে হয়। গাছের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায় ও বিভিন্ন রোগ ও পোকার আক্রমণ দেখা যায়। আগাম ফুল আসার প্রবণতা দেখা যায়,  ফলের  আকৃতি ছোট ও ওজন কম হয়। আঠা ঝরা বা গামোসিস ও ডাইব্যাকসহ অন্যান্য রোগে গাছ মারা যায়।

আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, রাজশাহী। ফোন : ০৭২১-৭৭৩২৭৭, ই-মেইল : rajshahi@ais.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon